
কেউ জাল বুনছেন, কেউ মেরামত করছেন নৌকা-ট্রলার। একদিন আগেও এ সময়টায় নদীতে জাল ফেলা এবং ইলিশ ধরা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন জেলেরা।
কিন্তু সেই অবস্থা শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে নেই। ঘাটগুলোতেও সুনসান নিরবতা।
শনিবার (১ মার্চ) ভোলার উপকূলীয় মাছ ঘাটগুলোতে এমনি চিত্র দেখা গেছে।
ইলিশের অভয়াশ্রম রক্ষায় মাছের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় কর্মব্যস্ত জেলেরা অনেকটাই বেকার হয়ে গেছেন। এতে তাদের পরিবারে দেখা দিয়েছে অভাব-অনাটন আর অনিশ্চয়তা।
জানা গেছে, ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশের পাঁচ অভয়াশ্রমের মধ্যে ভোলায় রয়েছে দুটি। এর মধ্যে ইলিশা থেকে চর পিয়াল পর্যস্ত মেঘনা নদীর ৯০ কিলোমিটার এবং ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম পর্যন্ত ১০৯ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ। ফলে ভোলার জেলেরা বেকার হয়ে পড়েছেন।
ইলিশা ও তুলাতলী এলাকার জেলে মোস্তফা ও সিরাজ বলেন, নদীতে মাছ ধরা বন্ধ তাই ঘাটে অলস সময় কাটাচ্ছি। জেলে পুনর্বাসনের চাল এখনও পাইনি।
উপকূলের জেলেররা জানান, বিকল্প কর্মসংস্থানের অংশ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে যে চাল বিতরণ করা হয়, তা বিতরণে বিলম্ব থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে কাটাতে হয়। তার মধ্যে আবার কিস্তির টাকার চিন্তা। তাই সরকারি চাল দ্রুত বিতরণ এবং সব এনজিও কিস্তি বন্ধ রাখতে হবে। এতে জেলেদের সংকট দূর হবে।
ভোলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ বলেন, আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ সম্পন্ন করব।
এদিকে ভোলার সাত উপজেলায় সরকারিভাবে ১ লাখ ৭০ হাজার ৬০০ জন জেলে নিবন্ধিত থাকলেও চাল বরাদ্দ এসেছে মাত্র ৮৯ হাজার জেলের জন্য। এতে নিবন্ধিত হয়েও চাল না পাওয়ার ক্ষোভ জেলেদের।
ভোলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আজাদ জাহান বলেন, আমরা দ্রুতই এনজিওর কিস্তি বন্ধ রাখার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব। এছাড়া সব জেলেরা যেন চাল পান সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।
০১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকছে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার।