
সজল হাওলাদার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের মধুমন্ডলের ডাঙ্গী গ্রামে জমি দখল ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য পলাশ চন্দ্র মন্ডল। সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ ও গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
পলাশ মন্ডল সাংবাদিকদের জানান, তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তি ৮২ শতাংশের মধ্যে হাসান প্রামানিক গং মাত্র ২০.৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। তবে তারা অবৈধভাবে পুরো জমি দখলের চেষ্টা করছেন এবং সেখানে বিভিন্ন মাদ্রাসার নামে সাইনবোর্ড বসিয়ে স্থাপনা নির্মাণের পাঁয়তারা করছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, এসব মাদ্রাসার নামে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর থেকে অনুদান এনে তা আত্মসাৎ করছেন হাসান প্রামানিক। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্থানীয় সালিশ হলেও তিনি কোনো নিয়ম-নীতি মানছেন না। বরং মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে চলেছেন।
পলাশ মন্ডল আরও জানান, জমি নিয়ে বিরোধ নিরসনের জন্য তিনি সদরপুর ইউএনও জাকিয়া সুলতানার কাছে আবেদন করেন। ইউএনও’র নির্দেশনায় উভয় পক্ষের জমি পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করে সিমেন্টের পিলার স্থাপন করা হয়। কিন্তু এরপর থেকেই হাসান প্রামানিক ইউএনও’র বিরুদ্ধেও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ করছেন এবং হলুদ সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছড়াচ্ছেন।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “যেকোনো সময় আমার সীমানা পিলার ভেঙে জমি দখলের চেষ্টা হতে পারে। এমনকি আমার পরিবার হামলার শিকার হতে পারে।”
সংবাদ সম্মেলনে ভাষানচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোল্লা মো. মাঈনুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, “হাসান প্রামানিক একজন ছদ্মবেশী মৌলভী। অতীতে সুফফা ও আয়েশা সিদ্দিকা নামের এতিমখানার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে সংখ্যালঘুদের জমি দখলের চেষ্টা করেছে। এবারও সে একই পন্থায় পলাশ মন্ডলের জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন।”
সদরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম পান্নু মৃধা বলেন, “হাসান প্রামানিক জমি দখল ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছেন। একাধিকবার সালিশ হলেও তিনি কিছু মানেন না। বরং ইউএনও’র সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ হয়ে তাঁর বিরুদ্ধেও মিথ্যা অভিযোগ করছেন।”
এসময় স্থানীয় জনগণ হাসান প্রামানিকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান, যাতে তারা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হাসান প্রামানিকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “জমিটি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখলে রয়েছি। মাদ্রাসার অনুদান আত্মসাৎ করার অভিযোগও সত্য নয়।”