০২:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ধ্বংসের হুঁশিয়ারি পুতিনের

রাশিয়ার গভীরে দূরপাল্লার হামলায় ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

রবিবার (৫ অক্টোবর) দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে এই সতর্কবার্তা দেন পুতিন।

তিনি বলেন, “এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হলে তা আমাদের সম্পর্ক ধ্বংস করবে অথবা অন্তত ইতিবাচক যে প্রবণতাগুলো দেখা যাচ্ছিল, তা একেবারে থেমে যাবে।”

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের আলাস্কা বৈঠকের মাত্র দুই মাস পরই রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আবারও তিক্ত হয়ে উঠেছে। বর্তমানে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে অগ্রসর হচ্ছে এবং ড্রোনগুলো ন্যাটোর আকাশসীমায় ঢুকছে বলে অভিযোগ করেছে কিয়েভ।

অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, “পুতিন শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছেন।” রাশিয়াকে ‘কাগুজে বাঘ’ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প আরও বলেন, “ইউক্রেনকে দমনে ব্যর্থ হয়ে রাশিয়া নিজের শক্তিহীনতা প্রমাণ করেছে।” এর জবাবে পুতিন পাল্টা প্রশ্ন তোলেন— “ন্যাটোই কি কাগুজে বাঘ নয়, যারা রাশিয়ার অগ্রযাত্রা থামাতে পারেনি?”

সম্প্রতি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানান, ইউক্রেনের টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের অনুরোধ বিবেচনায় আছে ওয়াশিংটনের। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।

টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা প্রায় ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার, যা থেকে ইউক্রেন রাশিয়ার রাজধানী মস্কো পর্যন্ত লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হবে।

গত সপ্তাহে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামো সম্পর্কিত গোয়েন্দা তথ্য ও দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি বিবেচনা করছে। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো বাস্তবসম্মত নয়; কারণ এগুলো বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হচ্ছে।

পুতিন বলেন, “মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়া টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার সম্ভব নয়। এমন অস্ত্র সরবরাহ মানে হবে উত্তেজনার এক নতুন অধ্যায়।”

রুশ প্রেসিডেন্ট আরও দাবি করেন, ইউক্রেন যুদ্ধ পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। তার অভিযোগ, ন্যাটো সম্প্রসারণের মাধ্যমে পশ্চিমারা রাশিয়াকে অপমান ও তাদের প্রভাববলয়ে হস্তক্ষেপ করেছে।

অন্যদিকে, পশ্চিমা নেতারা বলছেন, রাশিয়ার এই যুদ্ধ সাম্রাজ্যবাদী ভূমি দখলের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। তাদের মতে, রাশিয়াকে পরাজিত না করলে পুতিন ভবিষ্যতে ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোতেও হামলার ঝুঁকি নিতে পারেন।

📎 সূত্র: রয়টার্স

Tag :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

তথ্য সংরক্ষণ করুন

জনপ্রিয়

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস ২০২৫ উদযাপন

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ধ্বংসের হুঁশিয়ারি পুতিনের

আপডেট সময়: ০৪:৩৮:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫

রাশিয়ার গভীরে দূরপাল্লার হামলায় ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

রবিবার (৫ অক্টোবর) দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে এই সতর্কবার্তা দেন পুতিন।

তিনি বলেন, “এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হলে তা আমাদের সম্পর্ক ধ্বংস করবে অথবা অন্তত ইতিবাচক যে প্রবণতাগুলো দেখা যাচ্ছিল, তা একেবারে থেমে যাবে।”

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের আলাস্কা বৈঠকের মাত্র দুই মাস পরই রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আবারও তিক্ত হয়ে উঠেছে। বর্তমানে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে অগ্রসর হচ্ছে এবং ড্রোনগুলো ন্যাটোর আকাশসীমায় ঢুকছে বলে অভিযোগ করেছে কিয়েভ।

অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, “পুতিন শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছেন।” রাশিয়াকে ‘কাগুজে বাঘ’ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প আরও বলেন, “ইউক্রেনকে দমনে ব্যর্থ হয়ে রাশিয়া নিজের শক্তিহীনতা প্রমাণ করেছে।” এর জবাবে পুতিন পাল্টা প্রশ্ন তোলেন— “ন্যাটোই কি কাগুজে বাঘ নয়, যারা রাশিয়ার অগ্রযাত্রা থামাতে পারেনি?”

সম্প্রতি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানান, ইউক্রেনের টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের অনুরোধ বিবেচনায় আছে ওয়াশিংটনের। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।

টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা প্রায় ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার, যা থেকে ইউক্রেন রাশিয়ার রাজধানী মস্কো পর্যন্ত লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হবে।

গত সপ্তাহে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামো সম্পর্কিত গোয়েন্দা তথ্য ও দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি বিবেচনা করছে। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো বাস্তবসম্মত নয়; কারণ এগুলো বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হচ্ছে।

পুতিন বলেন, “মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়া টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার সম্ভব নয়। এমন অস্ত্র সরবরাহ মানে হবে উত্তেজনার এক নতুন অধ্যায়।”

রুশ প্রেসিডেন্ট আরও দাবি করেন, ইউক্রেন যুদ্ধ পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। তার অভিযোগ, ন্যাটো সম্প্রসারণের মাধ্যমে পশ্চিমারা রাশিয়াকে অপমান ও তাদের প্রভাববলয়ে হস্তক্ষেপ করেছে।

অন্যদিকে, পশ্চিমা নেতারা বলছেন, রাশিয়ার এই যুদ্ধ সাম্রাজ্যবাদী ভূমি দখলের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। তাদের মতে, রাশিয়াকে পরাজিত না করলে পুতিন ভবিষ্যতে ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোতেও হামলার ঝুঁকি নিতে পারেন।

📎 সূত্র: রয়টার্স