শেরপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পিপি চন্দন কুমার পালের জামিন ইস্যুতে জেলা জজ, পিপি ও জিপির অপসারণসহ ৮ দফা দাবিতে সকাল ৯ টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের প্রধান গেট অবরুদ্ধ করে রাখেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা।
(৬ অক্টোবর) সোমবার সকাল ৯ টা থেকে শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত, জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে তারা। একপর্যায়ে আদালতের প্রধান ফটক অবরোধ করে তারা কর্মসূচি পালন করে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা এ সময় ৮ দফা এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে বলে ঘোষণা দেন।
পরে ১২টার দিকে আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসক এর কাছে গিয়ে তাদের দাবী গুলোর কথা জানালে, জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান তাদের দাবিগুলোর প্রতি সমর্থন করে বলেন, লিখিত অভিযোগ দিলে আপনাদের দাবি গুলো আমি সরকারকে দ্রুতই জানাবো। একই সাথে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেয়া হয়।
এদিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যলয়সহ ওই কার্যালয়ের অভ্যন্তরে পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও আদালত পাড়ায় সকল কাজকর্ম বেলা ১২ টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে।
জানা গেছে, সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট চন্দন কুমার পাল এর বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৭টি মামলা হয়। পরে ভারতে পালানোর চেষ্টার সময় ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর বেনাপোল সীমান্তে আটক হয়ে তিনি প্রায় এক বছর কারাগারে ছিলেন।
চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে সব মামলায় জামিন পেলেও বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় ফের গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর শেরপুর আদালত থেকে জামিন পান তিনি এবং কারামুক্তির পর এলাকা ছেড়ে চলে যান। অনেকেরই ধারণা তিনি ভারত পালিয়ে গেছেন বলে ফেইসবুকে নানা পোস্ট করেন। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
এ সময় বিচারক, পিপি ও বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা ওই জামিন কাণ্ডে জড়িত বলে ওইসব পোস্টগুলোতে অভিযোগ উঠে।
এর জেরে পৌর বিএনপির সভাপতি ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুল মান্নানের উপরও সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। পরে তিনি সংবাদ সম্মেলনে অপপ্রচারের অভিযোগ করেন। পাল্টা হিসেবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংবাদ সম্মেলন করে দুই দিনের আল্টিমেটাম দেয়, যার ধারাবাহিকতায় আজকের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হলো।