০৩:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

নোয়াপাড়া বটতলীতে সন্ত্রাসী হামলা—আওয়ামী শ্রমিক লীগ নেতাসহ,কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা,গ্রেপ্তারের দাবি সাদ্দাম পরিবারের

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়া বটতলীতে স্থানীয় আওয়ামী শ্রমিক লীগ নেতার নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় গুরুতর আহত সাদ্দাম হোসেন নামের এক যুবক ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং পরবর্তীতে মামলা দায়ের করেছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ অক্টোবর রাত আনুমানিক ৯টা ৫ মিনিটে। হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী সাদ্দাম হোসেনের পরিবার আওয়ামী শ্রমিক লীগ নেতা আবদুল্লাহসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, সন্ত্রাসী হামলা, অস্ত্রপ্রয়োগ ও ভয়ভীতি প্রদানের অভিযোগ এনেছেন।

ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ধারা ১৫৪ অনুযায়ী ৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা নং–০৮/২৫ রুজু হয় এজাহারে অভিযুক্ত হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ রয়েছে—১/ আবদুল্লাহ (৩২), ২/ হারুন (২৪), ৩/ মোজাম্মেল হক (৩৫), ৪/আবদুল আজিজ (২৭) — পিতা: আবুল কালাম, মাতা: সোনা মেহের,৫/ইসমাইল (৪১) — পিতা: আবদুল মজিদ,৬/ জাগিরা (৫০) — পিতা: হায়দার আলী। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩/৪ জনকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।সকলেই টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড, নয়াপাড়া বাইন্যাটুড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।

এজাহারে সাদ্দাম হোসেন উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত। স্থানীয় আওয়ামী শ্রমিক লীগের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে তারা এলাকায় ভয়ভীতি ছড়িয়ে আধিপত্য কায়েম করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, তার এক প্রতিবেশীর সঙ্গে অভিযুক্ত ১ নম্বর আসামি,

আবদুল্লাহর অনৈতিক সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। এরই জেরে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়।

গত ৫ অক্টোবর রাতে নোয়াপাড়া বটতলী বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় মগপাড়া তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছালে ৫ নম্বর আসামির বাড়ির দিক থেকে হামলাকারীরা বের হয়ে তাকে ঘিরে ফেলে। ১ নম্বর আসামি হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে, পরবর্তীতে অন্যান্য আসামিরা লাঠি, কাঠের বাটাম ও ধারালো দা দিয়ে বেধড়ক মারধর চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় স্থানীয়রা ভয়ে পালিয়ে গেলে অভিযুক্তরা তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করে।

পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ৯৯৯-এ ফোন করা হলে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত সাদ্দামকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।

ভুক্তভোগী সাদ্দাম বলেন—“অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। আমরা প্রতিনিয়ত তাদের হুমকিতে রয়েছি। যেকোনো সময় তারা আমাদের প্রাণনাশ বা সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করতে পারে।”তিনি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

থানা সূত্রে জানা গেছে, মামলাটি আইনানুগভাবে গ্রহণ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মামলায় হামলা, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্রপ্রয়োগ, ভয়ভীতি ও হুমকির ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সাক্ষ্যগ্রহণ, জখমের চিকিৎসা রিপোর্ট ও সম্ভাব্য সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে।

স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রতিবেশীরা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন—“নোয়াপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী ও মাদক চক্র সক্রিয়। প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষ নিরাপদ থাকবে না।”

সংবাদদাতা টেকনাফ মডেল থানা ও হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। তদন্তের স্বচ্ছতা ও প্রশাসনিক অবস্থান সম্পর্কে মন্তব্য পাওয়ার পর পরবর্তী প্রতিবেদনে বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।

Tag :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

তথ্য সংরক্ষণ করুন

জনপ্রিয়

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ ক্যাম্পেইন 

নোয়াপাড়া বটতলীতে সন্ত্রাসী হামলা—আওয়ামী শ্রমিক লীগ নেতাসহ,কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা,গ্রেপ্তারের দাবি সাদ্দাম পরিবারের

আপডেট সময়: ০৫:৩৭:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়া বটতলীতে স্থানীয় আওয়ামী শ্রমিক লীগ নেতার নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় গুরুতর আহত সাদ্দাম হোসেন নামের এক যুবক ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং পরবর্তীতে মামলা দায়ের করেছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ অক্টোবর রাত আনুমানিক ৯টা ৫ মিনিটে। হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী সাদ্দাম হোসেনের পরিবার আওয়ামী শ্রমিক লীগ নেতা আবদুল্লাহসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, সন্ত্রাসী হামলা, অস্ত্রপ্রয়োগ ও ভয়ভীতি প্রদানের অভিযোগ এনেছেন।

ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ধারা ১৫৪ অনুযায়ী ৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা নং–০৮/২৫ রুজু হয় এজাহারে অভিযুক্ত হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ রয়েছে—১/ আবদুল্লাহ (৩২), ২/ হারুন (২৪), ৩/ মোজাম্মেল হক (৩৫), ৪/আবদুল আজিজ (২৭) — পিতা: আবুল কালাম, মাতা: সোনা মেহের,৫/ইসমাইল (৪১) — পিতা: আবদুল মজিদ,৬/ জাগিরা (৫০) — পিতা: হায়দার আলী। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩/৪ জনকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।সকলেই টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড, নয়াপাড়া বাইন্যাটুড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।

এজাহারে সাদ্দাম হোসেন উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত। স্থানীয় আওয়ামী শ্রমিক লীগের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে তারা এলাকায় ভয়ভীতি ছড়িয়ে আধিপত্য কায়েম করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, তার এক প্রতিবেশীর সঙ্গে অভিযুক্ত ১ নম্বর আসামি,

আবদুল্লাহর অনৈতিক সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। এরই জেরে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়।

গত ৫ অক্টোবর রাতে নোয়াপাড়া বটতলী বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় মগপাড়া তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছালে ৫ নম্বর আসামির বাড়ির দিক থেকে হামলাকারীরা বের হয়ে তাকে ঘিরে ফেলে। ১ নম্বর আসামি হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে, পরবর্তীতে অন্যান্য আসামিরা লাঠি, কাঠের বাটাম ও ধারালো দা দিয়ে বেধড়ক মারধর চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় স্থানীয়রা ভয়ে পালিয়ে গেলে অভিযুক্তরা তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করে।

পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ৯৯৯-এ ফোন করা হলে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত সাদ্দামকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।

ভুক্তভোগী সাদ্দাম বলেন—“অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। আমরা প্রতিনিয়ত তাদের হুমকিতে রয়েছি। যেকোনো সময় তারা আমাদের প্রাণনাশ বা সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করতে পারে।”তিনি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

থানা সূত্রে জানা গেছে, মামলাটি আইনানুগভাবে গ্রহণ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মামলায় হামলা, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্রপ্রয়োগ, ভয়ভীতি ও হুমকির ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সাক্ষ্যগ্রহণ, জখমের চিকিৎসা রিপোর্ট ও সম্ভাব্য সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে।

স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রতিবেশীরা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন—“নোয়াপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী ও মাদক চক্র সক্রিয়। প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষ নিরাপদ থাকবে না।”

সংবাদদাতা টেকনাফ মডেল থানা ও হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। তদন্তের স্বচ্ছতা ও প্রশাসনিক অবস্থান সম্পর্কে মন্তব্য পাওয়ার পর পরবর্তী প্রতিবেদনে বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।