০৫:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

আশুলিয়ায় আগুনে ১৭ দোকান ভস্মীভূত, কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

মোঃমামুন হোসেন,আশুলিয়া প্রতিনিধিঃ

শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার জিরানী বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় লাইব্রেরি ও মুদি দোকান সহ অন্তত ১৭ টি দোকানসহ ভিতরে থাকা সমস্ত মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী দোকান মালিকদের৷

রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র ষ্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আশুলিয়ার ও গাজীপুর মহানগরীর সীমান্তবর্তী জিরানী বাজারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। পরে
ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে আগুন নির্বাপণ করতে প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লাগে।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুনের খবর পেয়ে ডিইপিজেড ফায়ারসার্ভিস থেকে প্রথমে তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যোগ দেন। আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় পরে সারাবো ফায়ার সার্ভিস থেকে আরও দুটি ইউনিটসহ মোট ৫টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করে এবং প্রায় ৪০ মিনিট চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন এবং আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করতে প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লাগে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর মধ্যে মুদি দোকান, লাইব্রেরি, কাপড়ের দোকান, জুতার দোকান ও টিনের দোকান সহ অন্তত ১৭ টি দোকান রয়েছে।

দোকান মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১ টার দিকে তারা দোকানপাট বন্ধ করে বাড়িতে চলে যান। পরে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আগুনের খবর পেয়ে ছুটে আসেন বাজারে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আগুন নেভানোর চেষ্টা করে এবং ফায়ারসার্ভিসে খবর দেন।

সামি লাইব্রেরির মালিক আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তার দোকানে অন্তত এক কোটি টাকার উপরে মালামাল ছিল বলে দাবী করেন তিনি। এদিকে সাদ্দাম হোসেন জানান, তার মালিকানাধীন মুদি দোকানে মাস দুয়েক আগে ২২ লাখ টাকা এনজিও থেকে লোন করে মালামাল উঠিয়েছেন।

অন্যান্যদের মধ্যে আহাদ নূর আলমের মুদি দোকানে প্রায় ৫০ লাখ, মাহাবুবের মুদি দোকানে ৫০ লাখ, জুম্মান মুন্সী মুদি দোকানে ২০-২২ লাখ, জুবায়েরের মুদি দোকানে ১৮-২০ লাখ, আশরাফ মিয়ার মুদি দোকানে ১৫লাখ, আবুলের মুদি দোকান ও শাহিনের মুদি দোকান সহ অন্তত কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তাদের দাবী।

এছাড়াও বাজারের বাইরে কেরু বেপারী মার্কেটের ইমরুলের কাপড়ের দোকানে প্রায় ২৫ লাখ, লিজু মোল্লার কাপড়ের দোকানে প্রায় ৩০ লাখ, মঞ্জুর কাপরের দোকানে প্রায় ৩৫ লাখ, আব্দুস সবুরের জুতার দোকানে প্রায় ১০ লাখ এবং আরিফের জুতার দোকানে আগুন লাগে। এতে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

দোকান মালিকদের দাবী, তারা বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে লোনে টাকা নিয়ে দোকানে মালামাল তুলেছিল। এখন তারা নি:স্ব হয়ে গেছে। সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।

ডিইপিজেড ফায়ারসার্ভিসের সিনিয়র ষ্টেশন অফিসার প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, আগুনের খবর পেয়ে ডিইপিজেড থেকে তিনিটি এবং পরে সারাবো ফায়ারসার্ভিস থেকে আরও দুটি ইউনিট আনা হয়। পরে প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে আগুন নির্বাপণ করতে সময়বল লাগে প্রায় আড়ায় ঘন্টা। আগুনে প্রায় দুই কোটি টাকার মত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে বলেও তিনি জানান।

Tag :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

তথ্য সংরক্ষণ করুন

জনপ্রিয়

ধানের শীষের পক্ষে গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণ কালাইয়ে

আশুলিয়ায় আগুনে ১৭ দোকান ভস্মীভূত, কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

আপডেট সময়: ০৪:৪৯:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

মোঃমামুন হোসেন,আশুলিয়া প্রতিনিধিঃ

শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার জিরানী বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় লাইব্রেরি ও মুদি দোকান সহ অন্তত ১৭ টি দোকানসহ ভিতরে থাকা সমস্ত মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী দোকান মালিকদের৷

রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র ষ্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আশুলিয়ার ও গাজীপুর মহানগরীর সীমান্তবর্তী জিরানী বাজারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। পরে
ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে আগুন নির্বাপণ করতে প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লাগে।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুনের খবর পেয়ে ডিইপিজেড ফায়ারসার্ভিস থেকে প্রথমে তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যোগ দেন। আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় পরে সারাবো ফায়ার সার্ভিস থেকে আরও দুটি ইউনিটসহ মোট ৫টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করে এবং প্রায় ৪০ মিনিট চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন এবং আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করতে প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লাগে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর মধ্যে মুদি দোকান, লাইব্রেরি, কাপড়ের দোকান, জুতার দোকান ও টিনের দোকান সহ অন্তত ১৭ টি দোকান রয়েছে।

দোকান মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১ টার দিকে তারা দোকানপাট বন্ধ করে বাড়িতে চলে যান। পরে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আগুনের খবর পেয়ে ছুটে আসেন বাজারে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আগুন নেভানোর চেষ্টা করে এবং ফায়ারসার্ভিসে খবর দেন।

সামি লাইব্রেরির মালিক আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তার দোকানে অন্তত এক কোটি টাকার উপরে মালামাল ছিল বলে দাবী করেন তিনি। এদিকে সাদ্দাম হোসেন জানান, তার মালিকানাধীন মুদি দোকানে মাস দুয়েক আগে ২২ লাখ টাকা এনজিও থেকে লোন করে মালামাল উঠিয়েছেন।

অন্যান্যদের মধ্যে আহাদ নূর আলমের মুদি দোকানে প্রায় ৫০ লাখ, মাহাবুবের মুদি দোকানে ৫০ লাখ, জুম্মান মুন্সী মুদি দোকানে ২০-২২ লাখ, জুবায়েরের মুদি দোকানে ১৮-২০ লাখ, আশরাফ মিয়ার মুদি দোকানে ১৫লাখ, আবুলের মুদি দোকান ও শাহিনের মুদি দোকান সহ অন্তত কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তাদের দাবী।

এছাড়াও বাজারের বাইরে কেরু বেপারী মার্কেটের ইমরুলের কাপড়ের দোকানে প্রায় ২৫ লাখ, লিজু মোল্লার কাপড়ের দোকানে প্রায় ৩০ লাখ, মঞ্জুর কাপরের দোকানে প্রায় ৩৫ লাখ, আব্দুস সবুরের জুতার দোকানে প্রায় ১০ লাখ এবং আরিফের জুতার দোকানে আগুন লাগে। এতে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

দোকান মালিকদের দাবী, তারা বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে লোনে টাকা নিয়ে দোকানে মালামাল তুলেছিল। এখন তারা নি:স্ব হয়ে গেছে। সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।

ডিইপিজেড ফায়ারসার্ভিসের সিনিয়র ষ্টেশন অফিসার প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, আগুনের খবর পেয়ে ডিইপিজেড থেকে তিনিটি এবং পরে সারাবো ফায়ারসার্ভিস থেকে আরও দুটি ইউনিট আনা হয়। পরে প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে আগুন নির্বাপণ করতে সময়বল লাগে প্রায় আড়ায় ঘন্টা। আগুনে প্রায় দুই কোটি টাকার মত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে বলেও তিনি জানান।