০৩:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

খুলনা–৫ আসনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও শফি মোহাম্মদ খানের অবস্থান।

খুলনা–৫ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)–এর মনোনয়ন প্রত্যাশী শফি মোহাম্মদ খান বর্তমানে মাঠে সক্রিয়ভাবে নির্বাচন–কেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রাথমিক মনোনয়নে তিনি স্থান না পেলেও, দলের সর্বোচ্চ নীতি–নির্ধারকদের নির্দেশে তিনি এখনও নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন বলে জানান।

দলীয় নির্দেশনার প্রতি অবিচল অবস্থান

শফি মোহাম্মদ খান বলেন, “দলের সর্বোচ্চ নীতি–নির্ধারক মহলের কথাতেই আমি এখনও নির্বাচনী প্রচারণায় আছি। দলীয় হাইকম্যান্ড আমাকে সরে যেতে বললে আমি সঙ্গে সঙ্গেই মাঠ ছেড়ে দেব। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও আমি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাব না।”

তিনি আরও বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমান—এই পরিবারের ছবি যারা অবমাননা করেছে, তাদের ক্ষমা নেই। এই অবমাননার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”

রাজনৈতিক সহনশীলতার আহ্বান

৩৬ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,

“আমার পোস্টার-প্যানা ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ বন্ধে সকল রাজনৈতিক মতের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। রাজনৈতিক সহনশীলতা বজায় রাখা জরুরি।”

ভুয়া ভিডিও–সংবাদ প্রচারের অভিযোগ

গত দুই দিন ধরে একটি চিহ্নিত মহল প্রাইভেট WhatsApp গ্রুপ, ফেসবুক আইডি এবং ভুয়েফোঁড় অনলাইন মাধ্যমে AI ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও ও সংবাদ প্রচার করছে—এমন অভিযোগও উত্থাপন করেন তিনি।

৫ আগস্ট ২০২৪–পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট উল্লেখ

তিনি বলেন, “৫ আগস্ট ২০২৪ সালে সরকারের পরিবর্তনের পর দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন এসেছে, সেটি কিছু দুষ্টচক্র এখনো বুঝতে পারছে না।”

তার দাবি অনুযায়ী, দলত্যাগী, বহিষ্কৃত এবং বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত ব্যক্তিরাই বর্তমানে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ড করছে।

জিয়া পরিবার–এর ছবি অবমাননার অভিযোগ

প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে তিনি অভিযোগ করেন যে—

দামোদর ইউনিয়নে জিয়া পরিবারের ছবি অবমাননায় জড়িত: টিটো জমাদ্দার (আহ্বায়ক, স্বেচ্ছাসেবক দল, ফুলতলা উপজেলা) এবং বিদ্যুৎ (স্বেচ্ছাসেবক দল, খুলনা জেলা)

ফুলতলায় একই অভিযোগে অভিযুক্ত: আকরাম ও মমিন সরদার

তিনি দাবি করেন, এদের নেতা সাব্বির হোসেন রানা, যিনি বিএনপির সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশ নেন এবং পরে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কৃত হন। একইভাবে টিটু জমাদ্দার ও বিদ্যুৎও তার পক্ষে কাজ করে বহিষ্কৃত হন।

দলীয় ক্ষতির অভিযোগ

৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে সাব্বির হোসেন রানার বিরুদ্ধে তিনি দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। তার দাবি—এ সকল কর্মকাণ্ড ফুলতলায় বিএনপির ভোট–রাজনীতিতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, খুলনা–৫ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ঘোষণার পর আলি আজগর লবি ও তার পিএস লাভলীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় বহিষ্কৃত সাব্বির হোসেন রানা বিএনপির প্রোগ্রাম ও মঞ্চ ব্যবস্থাপনায় প্রভাব বিস্তার করছেন, যা দলীয় নীতির পরিপন্থী।

তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং অবৈধ প্রভাব বন্ধের দাবি জানান।

দলের প্রতি আনুগত্য ও জনগণের সমর্থন সম্পর্কে মন্তব্য

তিনি বলেন, “ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। লবি–লাভলী বিগত ১৭ বছর বিএনপির কোথায় ছিল? তাদের কোনো রাজনৈতিক অবদান নেই। তারা এ অঞ্চলের ভোটারও নন।”

তার দাবি—এই এলাকায় হিন্দু–মুসলিম সাধারণ জনগণ তার পক্ষে মতাদর্শগতভাবে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন।

তিনি বলেন, “এ অঞ্চলের হিন্দু ভাইরা বিএনপিকে নিরাপদ রাজনৈতিক আশ্রয় হিসেবে দেখছিলেন; কিন্তু লবি–লাভলীর প্রভাব বিস্তারের পর মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বহিষ্কৃত ও উশৃঙ্খল ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত দলীয় পরিবেশ সাধারণ মানুষকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে।”

জনমতের বিশ্লেষণ

স্থানীয় বাস্তবতা মূল্যায়ন করে দেখা যায়, বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের কাছে শফি মোহাম্মদ খান ইতিবাচক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, দীর্ঘদিনের দলীয় আনুগত্য ও মাঠ–সংগ্রামের কারণে তিনি স্থানীয়ভাবে একটি শক্ত অবস্থান সৃষ্টি করেছেন।

উপসংহার ও আবেদন

বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে, এবং খুলনা–৫ আসনে একটি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক অবস্থান পুনর্গঠনে শফি মোহাম্মদ খানকে উপযুক্ত নেতৃত্ব হিসেবে বিবেচনার দাবি জানান তিনি।

তার ভাষায়—“ন্যায় ও সত্যের প্রতীক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের বাহক, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার চিন্তার অনুসারী এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের গর্ব হয়ে উঠতে চাই আমি।”

Tag :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

তথ্য সংরক্ষণ করুন

জনপ্রিয়

সদরপুরে মন্দিরের জমি দখল নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১০, গ্রেপ্তার ১

খুলনা–৫ আসনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও শফি মোহাম্মদ খানের অবস্থান।

আপডেট সময়: ০১:৪২:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

খুলনা–৫ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)–এর মনোনয়ন প্রত্যাশী শফি মোহাম্মদ খান বর্তমানে মাঠে সক্রিয়ভাবে নির্বাচন–কেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রাথমিক মনোনয়নে তিনি স্থান না পেলেও, দলের সর্বোচ্চ নীতি–নির্ধারকদের নির্দেশে তিনি এখনও নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন বলে জানান।

দলীয় নির্দেশনার প্রতি অবিচল অবস্থান

শফি মোহাম্মদ খান বলেন, “দলের সর্বোচ্চ নীতি–নির্ধারক মহলের কথাতেই আমি এখনও নির্বাচনী প্রচারণায় আছি। দলীয় হাইকম্যান্ড আমাকে সরে যেতে বললে আমি সঙ্গে সঙ্গেই মাঠ ছেড়ে দেব। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও আমি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাব না।”

তিনি আরও বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমান—এই পরিবারের ছবি যারা অবমাননা করেছে, তাদের ক্ষমা নেই। এই অবমাননার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”

রাজনৈতিক সহনশীলতার আহ্বান

৩৬ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,

“আমার পোস্টার-প্যানা ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ বন্ধে সকল রাজনৈতিক মতের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। রাজনৈতিক সহনশীলতা বজায় রাখা জরুরি।”

ভুয়া ভিডিও–সংবাদ প্রচারের অভিযোগ

গত দুই দিন ধরে একটি চিহ্নিত মহল প্রাইভেট WhatsApp গ্রুপ, ফেসবুক আইডি এবং ভুয়েফোঁড় অনলাইন মাধ্যমে AI ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও ও সংবাদ প্রচার করছে—এমন অভিযোগও উত্থাপন করেন তিনি।

৫ আগস্ট ২০২৪–পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট উল্লেখ

তিনি বলেন, “৫ আগস্ট ২০২৪ সালে সরকারের পরিবর্তনের পর দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন এসেছে, সেটি কিছু দুষ্টচক্র এখনো বুঝতে পারছে না।”

তার দাবি অনুযায়ী, দলত্যাগী, বহিষ্কৃত এবং বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত ব্যক্তিরাই বর্তমানে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ড করছে।

জিয়া পরিবার–এর ছবি অবমাননার অভিযোগ

প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে তিনি অভিযোগ করেন যে—

দামোদর ইউনিয়নে জিয়া পরিবারের ছবি অবমাননায় জড়িত: টিটো জমাদ্দার (আহ্বায়ক, স্বেচ্ছাসেবক দল, ফুলতলা উপজেলা) এবং বিদ্যুৎ (স্বেচ্ছাসেবক দল, খুলনা জেলা)

ফুলতলায় একই অভিযোগে অভিযুক্ত: আকরাম ও মমিন সরদার

তিনি দাবি করেন, এদের নেতা সাব্বির হোসেন রানা, যিনি বিএনপির সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশ নেন এবং পরে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কৃত হন। একইভাবে টিটু জমাদ্দার ও বিদ্যুৎও তার পক্ষে কাজ করে বহিষ্কৃত হন।

দলীয় ক্ষতির অভিযোগ

৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে সাব্বির হোসেন রানার বিরুদ্ধে তিনি দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। তার দাবি—এ সকল কর্মকাণ্ড ফুলতলায় বিএনপির ভোট–রাজনীতিতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, খুলনা–৫ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ঘোষণার পর আলি আজগর লবি ও তার পিএস লাভলীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় বহিষ্কৃত সাব্বির হোসেন রানা বিএনপির প্রোগ্রাম ও মঞ্চ ব্যবস্থাপনায় প্রভাব বিস্তার করছেন, যা দলীয় নীতির পরিপন্থী।

তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং অবৈধ প্রভাব বন্ধের দাবি জানান।

দলের প্রতি আনুগত্য ও জনগণের সমর্থন সম্পর্কে মন্তব্য

তিনি বলেন, “ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। লবি–লাভলী বিগত ১৭ বছর বিএনপির কোথায় ছিল? তাদের কোনো রাজনৈতিক অবদান নেই। তারা এ অঞ্চলের ভোটারও নন।”

তার দাবি—এই এলাকায় হিন্দু–মুসলিম সাধারণ জনগণ তার পক্ষে মতাদর্শগতভাবে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন।

তিনি বলেন, “এ অঞ্চলের হিন্দু ভাইরা বিএনপিকে নিরাপদ রাজনৈতিক আশ্রয় হিসেবে দেখছিলেন; কিন্তু লবি–লাভলীর প্রভাব বিস্তারের পর মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বহিষ্কৃত ও উশৃঙ্খল ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত দলীয় পরিবেশ সাধারণ মানুষকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে।”

জনমতের বিশ্লেষণ

স্থানীয় বাস্তবতা মূল্যায়ন করে দেখা যায়, বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের কাছে শফি মোহাম্মদ খান ইতিবাচক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, দীর্ঘদিনের দলীয় আনুগত্য ও মাঠ–সংগ্রামের কারণে তিনি স্থানীয়ভাবে একটি শক্ত অবস্থান সৃষ্টি করেছেন।

উপসংহার ও আবেদন

বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে, এবং খুলনা–৫ আসনে একটি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক অবস্থান পুনর্গঠনে শফি মোহাম্মদ খানকে উপযুক্ত নেতৃত্ব হিসেবে বিবেচনার দাবি জানান তিনি।

তার ভাষায়—“ন্যায় ও সত্যের প্রতীক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের বাহক, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার চিন্তার অনুসারী এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের গর্ব হয়ে উঠতে চাই আমি।”